ইতিহাস ঐতিহ্যে লালিত জেলা সুনামগঞ্জের নারীশিক্ষা বিস্তারের জন্য সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের কথা বলতে গেলে প্রথমেই মনে পড়ে অত্র এলাকার কয়েকজন বিশিষ্ট মহিলা সমাজকর্মীর নাম, তাঁরা হচ্ছেন বেগম রাবেয়া বারী চৌধুরী, বেগম রফিকা রইছ, বেগম রাবেয়া রহমান, বেগম রাবেয়া লেইচ, বেগম রশিদা মাজেদা খানম, বেগম অঞ্জলী চৌধুরী প্রমুখ। যাদের ঐকান্তিক চেষ্টায় এবং তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি এঁর সাহায্য পুষ্ট হয়ে নারীশিক্ষার উন্নয়নে সুনামগঞ্জ মহিলা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে সুনামগঞ্জ সরকারী মহিলা কলেজ নামকরণ করা হয়।
পরবর্তীতে মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রদত্ত ১০,০০০০০/= (দশ লক্ষ) টাকা, জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের আর্থিক অনুদানে এর কার্যক্রম শুরু হয় (১৯৮৫-১৯৮৬)। ০১/০৩/১৯৮৬ খ্রি তারিখে প্রথম সাত সদস্য বিশিষ্ট সাংগঠনিক কমিটি গঠিত হয়। এর সভাপতি ছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব শফিকুর রহমান।
১.৫২ শতাংশ ভূমির উপর প্রতিষ্টিত কলেজটির প্রতিষ্ঠাকাল ৩ মার্চ ১৯৮৬ খ্রিঃ এবং প্রথম শিক্ষাবর্ষ ছিল ১৯৮৭-১৯৮৮। প্রথম পর্যায়ে ১৯৮৭-১৯৮৮ শিক্ষাবর্ষে মানবিক শাখায় মোট সাতটি বিষয়, সাতজন শিক্ষক, এক জন স্টাফ এবং ১১ জন ছাত্রী নিয়ে এর যাত্রা শুরু। তখন প্রতিষ্ঠান ভবনে ৪টি কক্ষ ছিল।
০১/০১/১৯৯১ খ্রি কলেজটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা কর্তৃক একাডেমিক স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়। ১৯৯৫ ইং থেকে মানবিক বিভাগের পাশাপাশি বিজ্ঞান বিভাগও চালু হয়। ১৯৯৬ খ্রিঃ থেকে কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে অনুমতি লাভ করে। ০৬ এপ্রিল ১৯৯৭ খ্রিঃ কলেজটি জাতীয়করণ করা হয় এবং ২০১১ খ্রিঃ থেকে কলেজটি ডিগ্রি কলেজে উত্তীর্ণ হয়। বর্তমানে কলেজটিতে ০১( এক) টি প্রশাসনিক ভবন, ০২ (দুইটি) টি একাডেমিক ভবন ও ০২ (দুইটি) ছাত্রীনিবাস রয়েছে।তাছাড়া তৎকালীন মাননীয় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী (বর্তমান মাননীয় মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়) এঁর প্রচেষ্ঠায় সুনামগঞ্জ পুরাতন জেলখানাকে একাডেমিক ভবন কাম ছাত্রীনিবাস হিসেবে সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের বর্ধিত ক্যাম্পাস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। সাম্প্রতিক ০১ (একটি) ৬ (ছয়) তলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভর্বন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। বর্তমান অধ্যক্ষ হিসেবে প্রফেসর জ্যোতির্ময় দাস কলেজে যোগদান করেই অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য মার্দার’স কর্নার নির্মাণ, অভিভাবক ছাউনি নির্মাণ, ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ কর্নার নির্মাণ করেন। অধ্যক্ষ মহোদয় ছাড়াও বর্তমানে ১২ জন কর্মকর্তা বিভিন্ন বিষয়ে কর্মরত রয়েছেন।সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট কর্মচারীর সংখ্যা ২০ জন এবং ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ২৫০০ জন।